শরিকদের মন্ত্রিত্ব না পাওয়া নিয়ে যা বললেন ওবায়দুল কাদের

প্রকাশঃ জানুয়ারি ৭, ২০১৯ সময়ঃ ২:২৪ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৭:২২ অপরাহ্ণ

কাউকে মন্ত্রিপরিষদে স্থান দেওয়ার শর্তে ১৪ দলীয় জোট গঠন করা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

একাদশ জাতীয় সংসদের মন্ত্রিপরিষদ গঠনের দিনে আজ সোমবার সচিবালয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে শরিকদের মন্ত্রিত্ব না পাওয়া, দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের বাদ পড়া, তরুণ ওপর ভরসাসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

গতকাল রোববার প্রধানমন্ত্রীসহ ৪৭ সদস্যের মন্ত্রিপরিষদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে আগে মন্ত্রী ছিলেন বা জ্যেষ্ঠ নেতা এমন ৩৬ জন বাদ পড়েছেন। বাদ পড়েছেন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিকরাও। মন্ত্রিসভায় নতুন এসেছেন ৩১ জন। এর মধ্যে ২৭ জন একেবারেই নতুন।

অন্যান্যবারের মতো এবারও মন্ত্রিপরিষদে শরিকদের প্রতিনিধিত্ব থাকবে, এটা বিভিন্ন গণমাধ্যমে নানাভাবে আলোচনায় ছিল। কিন্তু মন্ত্রিপরিষদের সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়ার জন্য ডাক পাওয়ার তালিকায় শরিকদের কারো নাম না থাকায় অনেকেই অবাক হন। যদিও দুদিন আগে নির্বাচনে বিশাল জয়ের ফলে মন্ত্রিপরিষদে ‘বিশাল চমকের’ ইঙ্গিত দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় নানা আলোচনা আর বিশ্লেষণ।

গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় শরিক দলের ঊর্ধ্বতন নেতারা বলেছেন, বিষয়টি সম্পর্কে তাঁরা অবগত নন। পাশাপাশি সময় এখনো ফুরিয়ে যায়নি বলেও মন্তব্য করেন তাঁরা।

এ অবস্থার মধ্যেই আজ সচিবালয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘১৪ দলীয় জোট কাউকে মন্ত্রী করার শর্তে গঠন করা হয়নি। মন্ত্রী হলে জোটে আছি, না হলে নাই—বিষয়টি এমন নয়। আর তা ছাড়া পাঁচ বছর অনেক বড় সময়। এর ভেতরে অনেক রদবদল হতে পারে। তখন জোট থেকে বা দলের ভেতর থেকে অনেকেরই ডাক পড়তে পারে।’

দলের জ্যেষ্ঠ ও প্রভাবশালী নেতাদের মন্ত্রিপরিষদ থেকে বাদ পড়া প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের দলের প্রভাবশালী ও জ্যেষ্ঠ নেতাদের এখন দল গোছানোর দায়িত্ব দেওয়া হবে। তাঁদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় নাই। দায়িত্ব ট্রান্সফার হয়েছে মাত্র। দল যাতে সরকারে হারিয়ে না যায়, জ্যেষ্ঠ ও পোড়খাওয়া নেতারা সে দায়িত্ব পালন করবেন।’

‘একটি স্মার্ট ও আধুনিক সরকার, সরকারের পাশাপাশি দল যদি গতিশীল হয়, তাহলে স্কোর করতে সুবিধা,’ বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

মন্ত্রী না হওয়ায় তাঁদের মনে কোনো কষ্ট আছে কি না জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মন্ত্রিসভা থেকে বাদ গেলে মনে কষ্ট পাওয়া স্বাভাবিক। আমাকে বাদ দিলে আমিও কষ্ট পেতাম। তবে প্রধানমন্ত্রী যেটা করেছেন সেটা সরকার, দেশ, জাতি ও দলের ভালোর জন্যই করেছেন। মন্ত্রী না হওয়ায় তাঁদের মধ্যে কষ্ট আছে বলে মনে হয় না।’

এবার কীভাবে মন্ত্রীদের নির্বাচন করা হয়েছে, এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যেসব এলাকা থেকে আগে মন্ত্রী করা হতো না, বঞ্চিত ছিল এলাকাগুলো, সেসব এলাকাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া সময় ও আধুনিক প্রেক্ষাপটকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। সর্বোপরি কথা হলো, প্রধানমন্ত্রী যেটা ভালো মনে করেছেন, সেটাই করেছেন। এটি সম্পূর্ণ তাঁর এখতিয়ারে।’

মন্ত্রিপরিষদে এত তরুণের সমাগম, তাঁরা যথাযথভাবে দায়িত্ব ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারবেন কি না জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘চেয়ার মেকস আ ম্যান। চেয়ারই তাঁকে দক্ষ ও যোগ্য করে তুলবে। তা ছাড়া যাঁরা পারফর্ম করতে পারবেন না, তাঁরা বাদ পড়ে যাবেন।’

এখন সরকারের সামনে মূল চ্যালেঞ্জ কী—জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনী ইশতেহারে যে ওয়াদা করেছিলাম, সেগুলো পরিপূর্ণভাবে সম্পূর্ণ করাই আমাদের দায়িত্ব।’

এ ছাড়া জাতীয় পার্টিকে সরকারে না নেওয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সেটা জাতীয় পার্টির জন্য ভালো হয়েছে, সরকারের জন্যও ভালো হয়েছে। পাঁচমিশালি দায়িত্ব পালনের চেয়ে এখন তাঁরা শুধু বিরোধীদলের ভূমিকা পালন করবেন। সত্যিকারের গণতন্ত্র আরো স্বাস্থ্যবান হবে।’

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G